২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় ফের চাপে পড়ল রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। চিহ্নিত অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়া বেতন ফেরত নেওয়ার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সরাসরি প্রশ্ন তোলে, “SSC-র ওয়েবসাইটে OMR শিট আপলোডের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তা কি মানা হয়েছে? নিয়োগের চারটি বিভাগে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কোন পর্যায়ে?”রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তবে হাইকোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণ স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়—রাজ্য ও SSC-র ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নন বিচারপতিরা।
SSC তালিকা প্রকাশ: অপেক্ষার অবসান?
চাকরিহারাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হোক। গত ১১ এপ্রিল, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু নিজে চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকে তালিকা প্রকাশের আশ্বাস দেন। যোগ্যদের অধিকার মঞ্চের পথে নামা: “বেতনের টাকা ফেরাও, তালিকা প্রকাশ করো”
রাজ্যের টালবাহানায় ক্ষুব্ধ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অধিকার মঞ্চ। আজ তাঁরা পথে নামছেন SSC ভবনের সামনে।
একজন চাকরিহারা শিক্ষক বললেন,
“আমরা পরীক্ষায় পাশ করেছি, অথচ অন্যরা চাকরি করছে। এখন সেই টাকা ফেরানোর লড়াইও আমাদের লড়তে হচ্ছে! এটা কতটা অন্যায় ভাবুন!”
তাঁদের দাবি—
অযোগ্যদের বেতন ফেরানো হোক
যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ হোক
অবিলম্বে পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হোক
তদন্তের অগ্রগতি ও CBI-র রিপোর্ট
হাইকোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দেয়, CBI যেন আগামী ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়। তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়।CBI জানায়—তদন্ত প্রায় শেষের পথে, রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে।পরবর্তী শুনানি আগামী পরশু, অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল। ততদিনে তালিকা প্রকাশ, প্রতিবাদ ও সরকারের ভূমিকা—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও গতি পেতে পারে।
নিরাপত্তা আঁটসাঁট, SSC ভবনে নজরদারি
আজ SSC ভবনের সামনে বিক্ষোভের আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সল্টলেকের আচার্য সদন চত্বর পুলিশে ছয়লাপ। সমস্ত আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রস্তুত প্রশাসন।
উপসংহার
রাজ্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সময় যত এগোচ্ছে, চাপ বাড়ছে SSC এবং রাজ্য সরকারের ওপর। আদালতের কড়া প্রশ্ন, আন্দোলনকারীদের প্রতিক্রিয়া, এবং তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট—সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলি হতে চলেছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এই মামলার নিষ্পত্তি শুধু নিয়োগ নয়, বরং শিক্ষাক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের এক বড় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।